মাথা ব্যথা যে শুধু বড়দের হয় তা নয়, শিশুদেরও হতে পারে। কয়েকটি কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।
শিশুর মাথা ব্যথা সাধারণভাবে স্বল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে।
ঘুম কম হলে, সারাক্ষণ ডিভাইসের দিকে তাকিয়ে থাকলে, মানসিক চাপ তৈরি হলে, সাইনাসের ইনফেকশন বা মাথায় কোনো আঘাত লাগার কারণে শিশুর মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে মাথা ব্যথা হতে পারে। এর সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অসুখের কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
শিশু বয়সে প্রধানত মানসিক চাপ ও মাইগ্রেনের কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
মানসিক চাপের উপসর্গ
* মাথার সামনে, দুই পাশে বা পেছনে কোনো কিছু চেপে ধরার অনুভূতি হওয়া
* সব সময় একটা ভোঁতা ধরনের ব্যথা অনুভূত হওয়া
* কাজকর্মের সময় ব্যথা না বাড়া
* বমি বা বমিভাব না থাকা
* মুখমণ্ডল বা কাঁধেও ব্যথা লাগা
মাইগ্রেনের উপসর্গ
* কপালের এক বা দুই পাশে ধপ ধপ ব্যথা করা
* বেশি দৌড়াদৌড়িতে ব্যথা বেড়ে যাওয়া
* মাথায় চক্কর দেওয়া, ক্লান্তি ভর করা
* বমি, বমিভাব, পেটব্যথা করা
* শব্দ, ঘ্রাণ ও আলোয় অতি স্পর্শকাতরতা
এ ছাড়া ভাইরাল ইনফেকশন ও সাইনুসাইটিস থেকেও মাথায় ব্যথা হয়।
মাথা ব্যথা কমাতে করণীয়
বেশির ভাগ মাথা ব্যথায় মেডিক্যাল ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয় না। তবে ব্যথা কমাতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন।
যেমন—
* আলো নিভিয়ে, শব্দ দূর করে শিশুর জন্য শান্ত পরিবেশ তৈরি করা
* প্রয়োজনে প্যারাসিটামল খাওয়ানো
* কপালে বা চোখের চারপাশে ঠাণ্ডা, ভেজা কাপড়ের আলতো স্পর্শ
মেডিক্যাল ব্যবস্থাপনা যদি
* প্রতি মাসে এক বা একাধিকবার মাথা ব্যথা হয়ে থাকে
* সহজে না সারে
* স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যথার মাত্রা বেশি হলে
* শিশুর দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে
* মাথায় আঘাতের পর থেকে ব্যথা শুরু হলে কিংবা জ্ঞান হারালে
এ ছাড়া শিশুর জ্ঞান না থাকলে, জ্বর ও অনবরত বমি, খিঁচুনি হলে, চোখে ঝাপসা দেখলে, দুর্বলতা দেখা দিলে, ত্বকে র্যাশ উঠলে এবং ঘাড় ব্যথা বা ঘাড় শক্তভাব থাকলে দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত।